বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাতকে নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার

 

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় নববধূ রুকসানা বেগমের (২২) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) এ ঘটনায় রুকসানার স্বামী মো. আলী হোসেনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু আত্মহত্যা না কি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—তা নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্ন ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা যায়, গত ২৩ জুলাই সকালে উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের বড়বিহাই গ্রামের নিজ বসত ঘরের রান্নাঘরের পাশের একটি কক্ষে বৈদ্যুতিক সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন রুকসানা বেগম। খবর পেয়ে ছাতক থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মোফাখখারুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। পরদিন ২৪ জুলাই নিহত রুকসানার বড় বোন মোছা. নাজমা বেগম (৩৫) থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ছাতক থানায় মামলা রুজু হয়। মামলায় উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের বড়বিহাই গ্রামের সফর আলীর ছেলে এবং রুকসানার স্বামী মো. আলী হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৩ এপ্রিল নানকার গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলামের কন্যা রুকসানা বেগমের বিয়ে হয় বড়বিহাই গ্রামের দুবাইফেরত মো. আলী হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই রুকসানাকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী। বিয়ের সময় ফ্রিজ ও গ্যাস চুলা না দেওয়ায় তাকে প্রায়ই মারধর ও অপমান করা হতো। সংসার রক্ষায় রুকসানা তার দরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে একাধিকবার নগদ অর্থ এনে দিলেও স্বামীর মানসিকতা পরিবর্তন হয়নি। ঘটনার দিন সকালে রুকসানার ঝুলন্ত মরদেহ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকতে দেখা গেলেও স্বামী ও পরিবারের কেউ তাকে নিচে নামানোর চেষ্টা করেনি। বরং তারা বিষয়টি অবহেলা করে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠে। পরে খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান আকন্দ বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্ধুদের সহযোগিতায় পুলিশ কন্সষ্টেবলের সরকারি কোয়ার্টারে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ!

ছাতকে নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার

প্রকাশের সময় : ০২:৩০:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

 

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় নববধূ রুকসানা বেগমের (২২) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) এ ঘটনায় রুকসানার স্বামী মো. আলী হোসেনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু আত্মহত্যা না কি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—তা নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্ন ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা যায়, গত ২৩ জুলাই সকালে উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের বড়বিহাই গ্রামের নিজ বসত ঘরের রান্নাঘরের পাশের একটি কক্ষে বৈদ্যুতিক সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন রুকসানা বেগম। খবর পেয়ে ছাতক থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মোফাখখারুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। পরদিন ২৪ জুলাই নিহত রুকসানার বড় বোন মোছা. নাজমা বেগম (৩৫) থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ছাতক থানায় মামলা রুজু হয়। মামলায় উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের বড়বিহাই গ্রামের সফর আলীর ছেলে এবং রুকসানার স্বামী মো. আলী হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ৩ এপ্রিল নানকার গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলামের কন্যা রুকসানা বেগমের বিয়ে হয় বড়বিহাই গ্রামের দুবাইফেরত মো. আলী হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই রুকসানাকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী। বিয়ের সময় ফ্রিজ ও গ্যাস চুলা না দেওয়ায় তাকে প্রায়ই মারধর ও অপমান করা হতো। সংসার রক্ষায় রুকসানা তার দরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে একাধিকবার নগদ অর্থ এনে দিলেও স্বামীর মানসিকতা পরিবর্তন হয়নি। ঘটনার দিন সকালে রুকসানার ঝুলন্ত মরদেহ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকতে দেখা গেলেও স্বামী ও পরিবারের কেউ তাকে নিচে নামানোর চেষ্টা করেনি। বরং তারা বিষয়টি অবহেলা করে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠে। পরে খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান আকন্দ বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।