Sylhet ০৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাতকে প্রকল্পের টাকা নিয়ে লাপাত্তা পিআইও

 

সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকে টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পের ঘুসের টাকা নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা (পিআইও) কেএম মাহবুর রহমান ৬দিন ধরে লাপাত্তা। পিআইও কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় কাজ করে বিলের টাকা পাচ্ছেন না প্রকল্পের কমিটির সদস্যরা।
জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পের ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ওঠে ছাতকের পিআইওর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পিআইওকে ১৬ মে সন্ধ্যায় বাসায় ডাকেন ইউএনও।এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাতক পিআইও কার্যালয়ের কার্যসহকারি নাজমুল ইসলামও। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রকল্পের কোনো ধরণের ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ছাড় দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন ইউএনও। পরদিন শনিবার অফিস করেননি পিআইও কেএম মাহবু্ব রহমান। ওইদিন রাতে ইউএনও বরাবরে তিন দিনের ছুটি চেয়ে একটি আবেদন লিখে ইউএনওকে না দিয়ে নিজ কার্যালয়ের টেবিলে রেখে কৌশলে ছাতক ছেড়ে যান পিআইও। ঘুস দুর্নীতির টাকা হজম করতে ওই পিআইও জেলা প্রশাসকের কাছে ছাতকের ইউএনও ও পিআইও অফিসের কার্যসহকারির বিরুদ্ধে একটি নাটক সাজিয়ে অভিযোগ করেন। গত মঙ্গলবার কার্যসহকারি নাজমুল ইসলামকে ছাতক থেকে রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় বদলি করা হয়। পিআইওর ঘুস দুর্নীতি প্রকাশের ভয়ে এখান থেকে বদলির চেষ্টা চালানো হয়।
উপজেলার মুক্তিরগাঁও গ্রামের ইজাজুল হক রনি জানিয়েছেন, তিনি মুক্তিরগাঁও গ্রামের রাস্তার উভয় পাশে মাটি ভরাট কাজের সেক্রেটারি। তার কাছ থেকে সরকারি খরচের নামে ২৪ হাজার ৫শ’ টাকা নিয়েছেন পিআইও কেএম মাহবুবুর রহমান। হাসনাবাদ-নয়া লম্বাহাটি রাস্তায় মাটি ভরাট কাজের সেক্রেটারি বাহাউদ্দিন শাহীর কাছে ১২ হাজার টাকা চেয়েছেন ওই পিআইও। এছাড়া প্রকল্পের খরচের নামে ওই পিআইও প্রকল্প কমিটির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পিআইও অফিসের কার্য সহকারি নাজমুল ইসলাম এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ইউএনও ও পিআইওর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। গত শনিবার থেকে পিআইও অফিসে নেই। শুনেছেন ওই পিআইও তাকে এখান থেকে বদলি করান।
এ বিষয়ে পিআইও কেএম মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান প্রকল্পের টাকা লেনদেনের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ইউএনও পিআইও’র মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও নাজমুলের বদলির ঘটনা তিনি শুনেছেন বলে জানান।
জানা যায় , ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ছাতকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হিসেবে যোগ দেন কেএম মাহবুব রহমান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর কৌশলে এখান থেকে বদলির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ওই পিআইও। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি ১৪ মে পর্যন্ত ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থায় দুই মাস ওই পিআইও’র অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন দোয়ারাবাজারের পিআইও লুৎফুর রহমান।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

ছাতকে প্রকল্পের টাকা নিয়ে লাপাত্তা পিআইও

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

 

সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকে টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পের ঘুসের টাকা নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা (পিআইও) কেএম মাহবুর রহমান ৬দিন ধরে লাপাত্তা। পিআইও কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় কাজ করে বিলের টাকা পাচ্ছেন না প্রকল্পের কমিটির সদস্যরা।
জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পের ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ওঠে ছাতকের পিআইওর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পিআইওকে ১৬ মে সন্ধ্যায় বাসায় ডাকেন ইউএনও।এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাতক পিআইও কার্যালয়ের কার্যসহকারি নাজমুল ইসলামও। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রকল্পের কোনো ধরণের ঘুস গ্রহণের অভিযোগ ছাড় দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন ইউএনও। পরদিন শনিবার অফিস করেননি পিআইও কেএম মাহবু্ব রহমান। ওইদিন রাতে ইউএনও বরাবরে তিন দিনের ছুটি চেয়ে একটি আবেদন লিখে ইউএনওকে না দিয়ে নিজ কার্যালয়ের টেবিলে রেখে কৌশলে ছাতক ছেড়ে যান পিআইও। ঘুস দুর্নীতির টাকা হজম করতে ওই পিআইও জেলা প্রশাসকের কাছে ছাতকের ইউএনও ও পিআইও অফিসের কার্যসহকারির বিরুদ্ধে একটি নাটক সাজিয়ে অভিযোগ করেন। গত মঙ্গলবার কার্যসহকারি নাজমুল ইসলামকে ছাতক থেকে রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় বদলি করা হয়। পিআইওর ঘুস দুর্নীতি প্রকাশের ভয়ে এখান থেকে বদলির চেষ্টা চালানো হয়।
উপজেলার মুক্তিরগাঁও গ্রামের ইজাজুল হক রনি জানিয়েছেন, তিনি মুক্তিরগাঁও গ্রামের রাস্তার উভয় পাশে মাটি ভরাট কাজের সেক্রেটারি। তার কাছ থেকে সরকারি খরচের নামে ২৪ হাজার ৫শ’ টাকা নিয়েছেন পিআইও কেএম মাহবুবুর রহমান। হাসনাবাদ-নয়া লম্বাহাটি রাস্তায় মাটি ভরাট কাজের সেক্রেটারি বাহাউদ্দিন শাহীর কাছে ১২ হাজার টাকা চেয়েছেন ওই পিআইও। এছাড়া প্রকল্পের খরচের নামে ওই পিআইও প্রকল্প কমিটির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পিআইও অফিসের কার্য সহকারি নাজমুল ইসলাম এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ইউএনও ও পিআইওর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। গত শনিবার থেকে পিআইও অফিসে নেই। শুনেছেন ওই পিআইও তাকে এখান থেকে বদলি করান।
এ বিষয়ে পিআইও কেএম মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান প্রকল্পের টাকা লেনদেনের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, ইউএনও পিআইও’র মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও নাজমুলের বদলির ঘটনা তিনি শুনেছেন বলে জানান।
জানা যায় , ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ছাতকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হিসেবে যোগ দেন কেএম মাহবুব রহমান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর কৌশলে এখান থেকে বদলির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ওই পিআইও। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি ১৪ মে পর্যন্ত ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থায় দুই মাস ওই পিআইও’র অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন দোয়ারাবাজারের পিআইও লুৎফুর রহমান।