Sylhet ০৮:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজ মহান মে দিবস

শ্রমজীবী মানুষের মে দিবসের চেতনা এখনো অধরা

  • ভিশন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৫:১১:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • ১১
শ্রমজীবী মানুষের শ্রমে আর ঘামে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরলেও বছরের পর বছর তাঁরা উপেক্ষিত। ফলে মে দিবসের চেতনার ১৪০ বছর পর তাঁদের ভাগ্যের চাকার তেমন পরিবর্তন হয়নি। এখনো ন্যূনতম মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামতে হয় শ্রমিকদের। মালিকের স্বেচ্ছাচারিতায় যখন-তখন চাকরি হারাতে হয়।

এমন প্রেক্ষাপটে শ্রমজীবী মানুষের জন্য মহান মে দিবসের চেতনা এখনো অধরা। 

শ্রম খাত বিশ্লেষকরা বলেন, শ্রমিকদের অধিকারের জন্য আইন থাকলেও সেই আইনও সীমাবদ্ধ। সব আইন এখন একটি খাতের ওপর সীমাবদ্ধ। সেটা হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্প।

এ ছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতগুলো পুরোটাই অবহেলিত। তাই দেশের শ্রম অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার খোলনলচে বদলানো না গেলে অর্থনীতি ও সমাজ স্থবির হয়ে যাবে। 

এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।

 

১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য এবং দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে শ্রমিকরা যে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন, তাঁদের সেই আত্মত্যাগের সম্মানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দিবসটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।

দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে গণমাধ্যমগুলো আজ বিভিন্ন লেখা প্রকাশ ও অনুষ্ঠান প্রচার করবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে আজ জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়।

দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বিশ্বজুড়ে শ্রমিক শ্রেণির মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।

মালিক-শ্রমিক সম্পর্কে এই দিবসের তাৎপর্য ও প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এতে শ্রমিকদের দৈনিক কাজের সময় নেমে আসে আট ঘণ্টায়। 

সারা বিশ্বের শ্রমিকরা তাঁদের শ্রমের উপযুক্ত মর্যাদা পেতে শুরু করেন। বিশ্বের ইতিহাসে সংযোজিত হয় সামাজিক পরিবর্তনের নতুন অধ্যায়। মে দিবসের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের জীবনে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়, এতে ধীরে ধীরে লোপ পেতে শুরু করে সামাজিক শ্রেণিবৈষম্য।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম শাখার এক স্মারকে শ্রমিককে চাকরিচ্যুতি, ছাঁটাই এবং মহান মে দিবসে কারখানা বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে, যৌক্তিক কারণ এবং শ্রম আইনের প্রতিপালন ছাড়া শ্রমিক চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে শ্রমিক চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করার আগে স্থানীয় প্রশাসন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্পাঞ্চল পুলিশ এবং বিজিএমইএর ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন মেনে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করা না হলে মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্মারকে বলা হয়, মহান মে দিবসে সব কারখানা/প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। কোনো কর্তৃপক্ষ মে দিবসে কারখানা খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। শ্রম শাখার উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ স্মারক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় পটপরিবর্তনের পর শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। সেই কমিশন একটি সুপারিশ করেছে। তবে এটা কখন আলোর মুখ দেখবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কারণ বৈশ্বিক চাপে শ্রম আইন ২০১৩, ২০১৮-তে সংশোধন করা হলেও মালিকদের চাপে শ্রমিকরা আইনের সুরক্ষা পাননি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের মধ্যে পোশাক খাতে কিছুটা পরিবর্তন এলেও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত পুরোটাই অবহেলিত।

এ জন্য শ্রম সংস্কার কমিশন জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে। এটাকে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে জাতীয় শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে ৫০ শতাংশ পোশাকশিল্প আর ৫০ শতাংশ অন্য খাত। এর আগে এটা ছিল শতভাগ পোশাক খাত।

তিনি বলেন, গত পাঁচ মাসে কয়েক লাখ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। তাঁদের সামাজিক নিরাপত্তা নেই। রাজনৈতিক বা মালিকের ইচ্ছায় শ্রমিকরা চাকরি হারাচ্ছেন। তাই এটা শুধু শ্রমিকদের জন্য নয়, অর্থনীতি ও সামাজিক নিরাপত্তা সবার জন্য নিশ্চিত করতে হবে। দেশের শ্রম অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার আমূল পরিবর্তন করা না গেলে অর্থনীতি ও সমাজ স্থবির হয়ে যাবে।

মজুরিকাঠামোর সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ সভাপতি তৌহিদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, মজুরি কম থাকার ফলে অতিরিক্ত কাজ করতে হয় শ্রমিকদের। এটা মে দিবসের চেতনার পরিপন্থী। তিনি বলেন, এতে শ্রমিক অপুষ্টিতে ভোগেন। তাঁর উত্পাদনশীলতা কমে, সন্তানকে স্কুলে না পাঠিয়ে কাজে পাঠান।

মে দিবসের চেতনা ও আইএলওর কনভেনশন মানা হচ্ছে না উল্লেখ করে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (জিডাব্লিউটিসি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈন কালের কণ্ঠকে বলেন, বৈশ্বিক চাপে দেশের শ্রম আইন সংশোধন করা হলেও শ্রমিকের ন্যায্য অধিকারের দাবি শ্রম আইনে জায়গা পায় না। অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিশ্চিত করা যায়নি।

তিনি বলেন, শ্রম আইনে শ্রমিক স্বার্থবিরোধী ধারা এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি। শ্রম আইনে মালিকদের প্রভাব থেকে সরকার মুক্ত হতে পারেনি। তাই এবারের মে দিবসে স্বার্থবিরোধী শ্রম আইনের পরিবর্তে গণতান্ত্রিক শ্রম আইনের দাবিতে সোচ্চার শ্রমিকরা।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

আজ মহান মে দিবস

শ্রমজীবী মানুষের মে দিবসের চেতনা এখনো অধরা

প্রকাশের সময় : ০৫:১১:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
শ্রমজীবী মানুষের শ্রমে আর ঘামে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরলেও বছরের পর বছর তাঁরা উপেক্ষিত। ফলে মে দিবসের চেতনার ১৪০ বছর পর তাঁদের ভাগ্যের চাকার তেমন পরিবর্তন হয়নি। এখনো ন্যূনতম মজুরির দাবিতে রাস্তায় নামতে হয় শ্রমিকদের। মালিকের স্বেচ্ছাচারিতায় যখন-তখন চাকরি হারাতে হয়।

এমন প্রেক্ষাপটে শ্রমজীবী মানুষের জন্য মহান মে দিবসের চেতনা এখনো অধরা। 

শ্রম খাত বিশ্লেষকরা বলেন, শ্রমিকদের অধিকারের জন্য আইন থাকলেও সেই আইনও সীমাবদ্ধ। সব আইন এখন একটি খাতের ওপর সীমাবদ্ধ। সেটা হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্প।

এ ছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতগুলো পুরোটাই অবহেলিত। তাই দেশের শ্রম অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার খোলনলচে বদলানো না গেলে অর্থনীতি ও সমাজ স্থবির হয়ে যাবে। 

এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।

 

১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য এবং দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে শ্রমিকরা যে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন, তাঁদের সেই আত্মত্যাগের সম্মানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দিবসটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।

দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে গণমাধ্যমগুলো আজ বিভিন্ন লেখা প্রকাশ ও অনুষ্ঠান প্রচার করবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে আজ জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়।

দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বিশ্বজুড়ে শ্রমিক শ্রেণির মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।

মালিক-শ্রমিক সম্পর্কে এই দিবসের তাৎপর্য ও প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এতে শ্রমিকদের দৈনিক কাজের সময় নেমে আসে আট ঘণ্টায়। 

সারা বিশ্বের শ্রমিকরা তাঁদের শ্রমের উপযুক্ত মর্যাদা পেতে শুরু করেন। বিশ্বের ইতিহাসে সংযোজিত হয় সামাজিক পরিবর্তনের নতুন অধ্যায়। মে দিবসের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের জীবনে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা হয়, এতে ধীরে ধীরে লোপ পেতে শুরু করে সামাজিক শ্রেণিবৈষম্য।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম শাখার এক স্মারকে শ্রমিককে চাকরিচ্যুতি, ছাঁটাই এবং মহান মে দিবসে কারখানা বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে, যৌক্তিক কারণ এবং শ্রম আইনের প্রতিপালন ছাড়া শ্রমিক চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে শ্রমিক চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করার আগে স্থানীয় প্রশাসন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্পাঞ্চল পুলিশ এবং বিজিএমইএর ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন মেনে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত/ছাঁটাই করা না হলে মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্মারকে বলা হয়, মহান মে দিবসে সব কারখানা/প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। কোনো কর্তৃপক্ষ মে দিবসে কারখানা খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। শ্রম শাখার উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ স্মারক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় পটপরিবর্তনের পর শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। সেই কমিশন একটি সুপারিশ করেছে। তবে এটা কখন আলোর মুখ দেখবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কারণ বৈশ্বিক চাপে শ্রম আইন ২০১৩, ২০১৮-তে সংশোধন করা হলেও মালিকদের চাপে শ্রমিকরা আইনের সুরক্ষা পাননি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের মধ্যে পোশাক খাতে কিছুটা পরিবর্তন এলেও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত পুরোটাই অবহেলিত।

এ জন্য শ্রম সংস্কার কমিশন জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে। এটাকে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে জাতীয় শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে ৫০ শতাংশ পোশাকশিল্প আর ৫০ শতাংশ অন্য খাত। এর আগে এটা ছিল শতভাগ পোশাক খাত।

তিনি বলেন, গত পাঁচ মাসে কয়েক লাখ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। তাঁদের সামাজিক নিরাপত্তা নেই। রাজনৈতিক বা মালিকের ইচ্ছায় শ্রমিকরা চাকরি হারাচ্ছেন। তাই এটা শুধু শ্রমিকদের জন্য নয়, অর্থনীতি ও সামাজিক নিরাপত্তা সবার জন্য নিশ্চিত করতে হবে। দেশের শ্রম অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার আমূল পরিবর্তন করা না গেলে অর্থনীতি ও সমাজ স্থবির হয়ে যাবে।

মজুরিকাঠামোর সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ সভাপতি তৌহিদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, মজুরি কম থাকার ফলে অতিরিক্ত কাজ করতে হয় শ্রমিকদের। এটা মে দিবসের চেতনার পরিপন্থী। তিনি বলেন, এতে শ্রমিক অপুষ্টিতে ভোগেন। তাঁর উত্পাদনশীলতা কমে, সন্তানকে স্কুলে না পাঠিয়ে কাজে পাঠান।

মে দিবসের চেতনা ও আইএলওর কনভেনশন মানা হচ্ছে না উল্লেখ করে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (জিডাব্লিউটিসি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈন কালের কণ্ঠকে বলেন, বৈশ্বিক চাপে দেশের শ্রম আইন সংশোধন করা হলেও শ্রমিকের ন্যায্য অধিকারের দাবি শ্রম আইনে জায়গা পায় না। অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিশ্চিত করা যায়নি।

তিনি বলেন, শ্রম আইনে শ্রমিক স্বার্থবিরোধী ধারা এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি। শ্রম আইনে মালিকদের প্রভাব থেকে সরকার মুক্ত হতে পারেনি। তাই এবারের মে দিবসে স্বার্থবিরোধী শ্রম আইনের পরিবর্তে গণতান্ত্রিক শ্রম আইনের দাবিতে সোচ্চার শ্রমিকরা।